বাসর ঘরে কি আছে
আমরা শপথ করেতিছি যে, কেউ কোনো দিন প্রেম করবো না । কখনো কোনো মেয়ের দিকে ভুলেও তাকাবো না । এবং সবসময় সিঙ্গেল থাকবো । কেউ যদি ভুলেও প্রেমে পড়ে তাহলে তাকে ফ্রেন্ড লিষ্ট থেকে ব্যান্ড করে দেয়া হবে । শাস্তি হিসেবে আরো থাকছে তাকে ফেসবুক থেকে একদম ব্লক । হাত মেলাও
সবাই হাত মেলালো । সবাই বলতে আমরা চার বন্ধু ।, রুদ্র, প্রিন্স, নিলয় সিহাব । মানে আমি । সেই ছোট কাল থেকেই আমাদের বন্ধুত্ব । কখনো কেউ কাউকে ছেড়ে যাইনি । এমন কি কলেজের গন্ডি পেরিয়ে যখন সবাই ভার্সিটিতে ভর্তি হলাম তখনো আমরা এক সাথে ছিলাম । কিন্তু আজ আমরা একসাথে নেই । নিশ্চুই প্রশ্ন জাগছে কেনো নেই.? সে ঘটনাই আজকে আপনাদের বলবো ।
বিবরণ সরুপ,,, রুদ্র- রুদ্র হচ্ছে সহজ সরল হাবা গোবা একটি ছেলে । দেখতে শুনতে বেশ ভদ্র আর দামরা গরুর মতো মোটুরাম । তবে সালা একটু লুইচ্ছা । চোখে চশমা পড়ে । তাই তারে সবাই ভদ্র মনে করে । রাস্তায় কোনো মেয়ে দেখলেই এক দৃষ্টিতে হ্যাঁ করে তাকিয়ে থেকে ফুল স্কান করে ফেলে । কিছুদিন হলো সে একটা মেয়ের জুতার বারি খেয়েছে । তাই তিনি এখন এই শোকে কাতর ।
প্রিন্স- নামটা শুনে রাজা বাদশা মনে হলেও সালা একটা সেই লেভেলের ফকির । ফকির বললে ভুল হবে । ফকিরের চেয়ে বড় ফকির । ফ্রেন্ডদের কে তো কখনো কিছু ট্রিট দেয়নি । বরং পেলে আরো চেটে পুটে খেয়ে আসতো । আমরা বাকি তিনজন কখনো তাকে ভাঙ্গাতে পারিনি । তাই একদিন তাকে ইচ্ছা করে পকেট মেরে পার্টি দিছি । বন্ধু আমার এ জন্য আপাতত আমাদের সামনে অভিমান করে বসে আছে ।
নিলয়- বড় লোক বাবার একমাত্র পোলা । দেখতে অনেক কিউট । বাট একটু লাজুক । মেয়ে পেটাতে ভীষণ অস্তাদ । ওহ সরি ভুল বললাম । মেয়েরাই তাকে পটানোর চেষ্টা করতো । নিলয় ভালো গান গাইতে পারে তো । সাথে ভালো গিটারো বাজাতে পারে । এর জন্যই হয়তো মেয়েরা তাকে দেখে ক্রাশ খাইতো । কতো মেয়ে প্রেমের প্রস্তুত দেয় । বাট আমাদের এই অসহায় বন্ধু গুলোর চাদমাখা মুখখান দেখে না বইলা দেয় । আসলে আমরাই তাকে করতে দেইনা । কারন আমদেরর একটা শপথ করা হয়েছে যেটা গল্পের শুরুতেই বলছি ।
সিহাব- নিজের প্রশংসা নিজে বললে হয়তো অনেকেই বলবে বাড়িয়ে বলছি । তাই আপাতত কিছু বলছিনা ।
এই হলো আমাদের চার বন্ধুর সম্পর্ক । ঢাকা সহরের ব্যাস্ত নগরীর কোনো এক ফ্লাটে আমরা চার বন্ধু ভাড়া নিয়ে থাকি । ব্যাচেলার দের জীবন যেরকম কাটে আর কি ঠিক সেভাবেই আমাদের দিনগুলো বেশ কাটতো । সারাদিন বাইরে ঘুরাঘুরি । মজ মাস্তি, আড্ডা আর সন্ধ্যা হলেই সবব গুলা একসাথে জড় হয়ে মোবাইল গুতা । এই ছিলো আমাদের নিত্যদিনের কাজ । মনুষের মন কখনো আটকা যায়না । এবং সেটা সত চেষ্টা করলেও বেধে রাখা যায়না । প্রিয় বন্ধু প্রিন্স । হলা যে এত্তো বড় নিমক হারাম । হ্লারে সামনে পাইলে এহনি কুপাইতাম ।
ঘটনা হইলো গিয়া বন্ধু প্রিন্স অনেক আগে থেকেই একটা মেয়ের লগে প্রেম করসে চুপি চুপি । সালা আমাদের কখনো বলেনাই । বলবে কেমন করে সাহসটাই তো পায়নাই ।
প্রিন্স দেখি হাপাইতে হাপাইতে রুমে ঢুকলো । তিনজনেই দেইখা অবাক.!
কিরে কি হইছে তোর এভাবে হাপাইতছোস কিল্লাই.? কোনো ভুতে দৌড়ানি দিছে নাকি ।
( রুদ্র) না দোস্ত. আর বলিস না ভাই আমার । আমি একটা বড্ডো ভুল কইরালাকইছি রে ভাই । তোগোর সাথে বেইমানি করছি । তোরা আমারে মাফ কইরা দে ।( কাদো কাদো ভাব প্রিন্স)
ঐ মামুর বেটা দিনদুপুরে কি তোরে জিনে ধরছে নাকি । কি বেঈমানী করছোস । খুইলা বল দেহি.?( আমি)
দোস্ত আমি তোগরে না জানাইয়া একটা মাইয়ার লগে প্রেম করছি । সেই কথা তোদের বলিনাই । বললে তোরা আচতো রাখতি না । কিন্তু একটা ঘটনা ঘইটা গেছে । প্রিন্স)
কস কি হ্লা । এতো বড় বেঈমানী । আমাগো লগে.?( নিলয়)
ঐ বেটা থাম । আগে হুনতে দে । তারপর কি হইছে বল( আমি)
সেই মেয়ে আইসা আমারে ডাইরেক্ট থ্রেড মারছে । আগামি তিনদিনের মধ্যে বিয়ে না করলে সে তাদের বাসার ছাদ থাইকা লাভ দিবো । এবং দোসি হিসেবে আমার নামে ছুসাইড নোট লেইখা যাইবো । আমারে বাচা দোস্ত । আমি বিয়া করুম না । কেদেই দিলো প্রিন্স) ঐ বেটা ঐ থাম । কাদোস কিল্লাই হ্লা । নিলয়)
তিনজনই পরে গেলাম মহা টেনসনে । কি করবো ভাবতেছি । ভুল যেহেতু করছেই । তাই শাস্তি হিসেবে বিয়েটা করতে হবে তাকে । তবে একটা সর্ত । বাসর ঘরে ঢুকেই পাচ মিনিটের মধ্যেই বের হয়ে আসতে হবে । এবং আমাদের সাথে আড্ডা দিতে হবে । বন্ধু আমার রাজি । কাজি এনে বিয়ে পড়ায় দিলাম । বন্ধুর ফ্যামিলিরে বেপারটা খুলে বলার সাথেই রাজি হইছে । যেহেতু মেয়ে ভালো । বন্ধুর আজকে বাসর রাত । আমরা নিচে ওয়েট করতেছি তার জন্য যেহেতু কথা ছিলো বন্ধু পাচ মিনিটের মধ্যেই আমাদের সাথে আড্ডায় মেতে উঠবে ।
পাচ মিনিট গেলো । কুড়ি মিনট গেলো । এক ঘন্টা, দুই ঘন্টা গেলো । বাট বন্ধু ঐ যে বাসর ঘরে ঢুকলো আর ফিরা আইলো না । এটা বড় নিমক হারামি ছিলো । তাকে এখন ফোন করেও আর আমাদের সাথে পাওয়া যায়না । বিভিন্ন অযুহাত দিতো । বউ পাইলে যেটা হয় আর কি ।
রুল অনুযায়ী তাকে ফ্রেন্ড লিস্ট থেকে ডিলেট । এবং ব্লক । নতুন রুল চালু হলো । নিলয়- প্রাইভেট মেডামের কাছে এক্সট্রা টাইম পড়তো । মেডাম দেখতে সেই লেভেলের কিউট আর সেক্সি ছিলো । আগেই বলেছিলাম নিলয়ের উপর সব মাইয়ারাই ক্রাশ খাইতো । আর মেডাম কেনো বাদ যায় । তিনিও ক্রাশিতো নিলয়ের উপরে । নিলয় হ্লাও মেডামের লগে পরোকিয়া শুরু করলো । সরি পরোকিয়া বললাম এ কারনে । যেহেতু মেডাম আমাদের বয়সে বড় । আর মেডামের তখনো বিয়া হয়নি । তাই বড় হওয়ার কারনে পরোকিয়া বললাম ।
আপনারা আবার উল্টা পাল্টা বুইঝেন না । তো এই পরোকিয়া করতে গিয়া বন্ধু আমার গেলো ফাইসা । মেডামের লগে এক্সট্রা কেয়ার মানে ইন্টু পিন্টু করতে গিয়া মেডামের বাপের সামনে খাইলো ধরা । তাই লোক লজ্জার ভয়ে পড়ায় দিলো বিয়া । বন্ধু আমার রাজি না হইলেও বাসর ঘরে গিয়ে খুশিতে আত্মহারা । যদিও প্রিন্স এর মতো প্লান ছিলো পালানো । ফুল টেংকি বাইকে তেল নিয়া আমি আর রুদ্র নিচে ওয়েট করছি । বন্ধু ঐ যে ঢুকলো বাসর ঘরে আর ফিরাও চাইলো না ।
দোস্ত এই বাসর ঘরে কি আছে রে । যেই হ্লায় ঢুকে আর বের হইতে চায় না.?( রুদ্র) খোদায় জানে রে দোস্ত একটা দীর্ঘশ্বাস টান দিয়ে ।( আমি) এভাবে হারিয়ে গেলো দুই বন্ধু । এখন বন্ধু বলতে রুদ্র আর আমি । আবার নতুন করে নিয়োম ।
দোস্ত আমি তোরে ভুলেও ছাইড়া জামুনা । জীবন থাকতেও না । দোস্ত এখন থাইকা আমরা দুইজন একলগে চলমু । দুজন দু্জনের সব বিপদে এক সাথে থাকবো । যতই ঝড় আসুক ।( রুদ্র) দুর হ্লা তোর যে দামরা বডি । ঘুির্নঝড় আইলেও তোরে উরাইতে পারবো না । হাহাহা( আমি)